নিউজ ডেস্ক: ভুল প্রমাণিত হলেন পিকে, লোকসভা নির্বাচনে বাংলার এমনকি দেশের ফল মিলাতে পারলে না, ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর

২০২১ এ নির্বাচনে যে পিকে হুবহু ফলাফল ভবিষ্যৎবাণী করে মিলিয়ে দিতে পেরেছিল।সেই পিকে এইবারে ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে বাংলার ফল মিলাতে পারেনি, এমনকি জাতীয় রাজনীতির সংখ্যাও মেলাতে পারলেন না তিনি। পিকে ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন একার ক্ষমতায় ৪০০ আসন পার করতে না পারলেও ৩০০র বেশি আসনে জয়ী হবে বিজেপি,NDA জোট। তার দাবি ছিল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এক নম্বর দল হয়ে উঠে আসবে। কিন্তু ২০২৪ এ তার হিসেব মিলল না। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ পাওয়া তো দূর, একার ক্ষমতায় সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনও জিততে পারেনি বিজেপি। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের ফলাফলও ছুঁতে পারেনি তারা। পশ্চিমবঙ্গেও সেভাবে জায়গা করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। বরং ১৯ সালের ফলাফল থেকে আরও খারাপ ফলাফল করেছে বিজেপি। ১৮ থেকে আসন নেমে এসেছে বারোতে।

মঙ্গলবার ভোট গণনার শুরুর দিক থেকে গেরুয়া শিবির এগিয়ে থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় লড়াই এত সহজ নয়।বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA জোটকে কখনও ছাপিয়ে যাচ্ছিল I.N.D.I.A জোট, কখনও আবার সমানে সমানে চলছিল লড়াই। দিনের শেষে ম্যাজিক সংখ্যায় পৌঁছতেই পারেনি বিজেপি। তাদের ঘাড়ের কাছেই কার্যত নিঃশ্বাস ফেলছে I.N.D.I.A জোট, যাদের অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রশান্ত কিশোর। NDA জোট মিলে বিজেপি সরকার গড়ার সংখ্যা পেয়েছে কিন্তু,২৪০ আসন ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে INDIA জোট

নির্বাচনী ফল ঘোষণা হওয়ার পরই ভোট কুশলী পিকের ভবিষ্যৎ বাণী নিয়ে কাটাছেঁড়া করা শুরু হয়ে যায়।কারণ ভোটগ্রহণের শেষ পর্যায়ে প্রশান্তের দাবি ছিল, একার ক্ষমতায় বিজেপি যদি ৩৭০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে নাও পারে, ২০১৯ সালে প্রাপ্ত ৩০৩ আসনের চেয়েও বেশি আসন পাবে তারা। দক্ষিণ এবং পূর্ব ভারতে বিজেপি অভূতপূর্ব ফল করবে বলেও দাবি করেছিলেন।

হিমাচল প্রদেশ এবং তেলঙ্গানায় এর আগে হিসেব মেলাতে পারেননি প্রশান্ত। তাই এতটা নিশ্চিন্ত তিনি হচ্ছেন কীভাবে সেই প্রশ্নও করেছিলেন প্রশান্ত।কিন্তু জবাব দিতে গিয়ে কার্যত আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছিল প্রশান্তকে। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকে পোস্ট হওয়া আগের ভবিষ্যদ্বাণী তুলে ধরলেও, নিজের ভুল স্বীকার করতে চাননি তিনি। এমনকি বুথফেরত সমীক্ষা নিয়ে বিরোধীরা যখন সরব, সেই সময়ও বিজেপি-র জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সুরই ধরা পড়েছিল প্রশান্তের কন্ঠে।

প্রথম কয়েক দফার ভোটগ্রহণের হার নিয়ে যখন উদ্বেগ ছড়ায়, ঠিক সেই সময়ই প্রশান্ত বিজেপি-কে অদম্য, অজেয় হিসেবে তুলে ধরার গরজ কেন দেখালেন, প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ভুল মানতে না চাওয়া এবং ভুল ধরিয়ে দেওয়া সাংবাদিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা নিয়ে নিন্দার মুখে পড়েন। NDA-র সঙ্গে হাত মেলানো চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে সেই সময়ই। মোদি যখন পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে ভাল হবে বলে দাবি করছেন, সেই একই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এক নম্বর দল হিসেবে উঠে আসবে বলে যে মন্তব্য করেন প্রশান্ত, তাতে তাঁর রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসার পর সেই তত্ত্ব আবারও তুলে ধরছেন অনেকেই। অবশেষে ২১ সালে হুবহু মিলে যাওয়া ফলাফল, থেকে আত্মবিশ্বাসী পীকে এবার ভুল প্রমাণিত হলেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *