লিফটের এর মধ্যে আটকে ৪২ ঘন্টা – ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা
কল্পনা করলেই শিহরিত হতে হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিরও তো কিছু ত্রুটি থাকে। আর সেখান থেকেই তৈরী হয় নানা দুর্ঘটনা। এমনি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন কেরালার একজন ৫৯ বছরের প্রবীণ মানুষ রবীন্দ্রন নায়ার। এক-দু’ ঘণ্টা নয়, টানা ৪২ ঘণ্টা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের লিফ্টে আটকে ছিলেন তিনি। নিখোঁজ হন শনিবার দুপুরে। শেষমেশ সোমবার সকালে লিফটের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁকে। দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তির পর সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শুনিয়েছেন রবীন্দ্রন। কেরলের উল্লুরের বাসিন্দা তিনি।
তিরুঅনন্তপুরমের একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের লিফটে আটকে পড়েন তিনি। শনিবার চিকিৎসার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রন অভিযোগ করেন, লিফটে আটকে পড়েছেন বুঝতে পেরে বারবার আপৎকালীন বোতাম টেপেন তিনি। কিন্তু তাতে কোনও সাড়া মেলেনি। এমনকী লিফটের ভিতরে থাকা একাধিক হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেও সুরাহা হয়নি। সেখানেই তিনি আটকে ছিলেন টানা ৪২ ঘন্টা।
লিফটের ভিতরেই দুদিন কেটে যায় রবীন্দ্রনের। এক সময় মোবাইল ফোনের চার্জ ফুরিয়ে যায়। সঙ্গে খাবার কিংবা জলের বোতল ছিল না। ফলে খিদে ও তেষ্টায় কষ্ট পেতে থাকেন তিনি। দু’রাত চোখের পাতা এক করতে পারেননি। সবচেয়ে বড় কথা, লিফ্টে ছিল না আলো কিংবা পাখাও। কেবল হাওয়া ঢোকার এক চিলতে জায়গা ছিল, তাতেই অক্সিজেন মিলছিল কিছুটা। বাধ্য হয়ে লিফটের এক কোণে প্রস্রাব করেন, বসেছিলেন অন্য পাশে। মুক্তি পেয়ে হাউ হাউ করে কেঁদে ওঠেন তিনি। রবিরার বিকেলে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁর পরিবার। এর পর সোমবার লিফটের কর্মীরা নিয়মমাফিক তদারকি করতে গিয়ে রবীন্দ্রনকে উদ্ধার করেন। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁকে। এদিকে ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। স্বাস্থ্য দপ্তর লিফটের দুই অপারেটর এবং এক ডিউটি সার্জেন্টকে সাসপেন্ড করেছে।